ইউরোপের কোন দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ অনেক মানুষ এই তথ্য জানতে চায়। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ইউরোপে বসবাস এবং নাগরিকত্ব পাওয়ার। তাই ইউরোপে যাওয়ার আগে জেনে নিন ইউরোপের কোন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া খুব সহজ।ইউরোপ তার উচ্চ জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যাইহোক, সব দেশে কিন্তু একইভাবে নাগরিকত্ব পাবার প্রক্রিয়া নেই। কিছু দেশে, নাগরিকত্ব প্রাপ্তি তুলনামূলকভাবে সহজ, আবার কিছু দেশে বেশ জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। এই নিবন্ধে আমরা ইউরোপের দেশগুলি সম্পর্কে আলোচনা করব যেখানে নাগরিকত্ব পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ।
সূচিপত্র
ইউরোপের কোন দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ
পর্তুগাল ইউরোপের অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ যেখানে নাগরিকত্ব পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। পর্তুগালে রেসিডেন্সি বিনিয়োগ, রিয়েল এস্টেট ক্রয় বা ৫ বছরের গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামের মাধ্যমে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আপনি নাগরিকত্ব প্রাপ্ত হতে পারেন। ৫ বছর বসবাসের পর, আপনি যদি পর্তুগিজ ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তবে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন।
পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়া খুবই সহজ জেনে নিন কিভাবে
শর্ত | সময়সীমা |
---|---|
জন্মের মাধ্যমে (মা পর্তুগিজ নাগরিক) | জন্মের সাথে সাথে |
জন্মের মাধ্যমে (বাবা-মা অন্য দেশের নাগরিক) | ২ বছর (প্রাইমারি স্কুল শেষ করতে হবে) |
জন্মের মাধ্যমে (টেরিটোরিতে জন্ম / বাবার রেসিডেন্স পারমিট ২ বছরের বেশি) | জন্মের পরপর |
বৈধ অবস্থান (৫ বছরের বেশি, ৬ বছরের কম) | ৫ বছর |
বৈবাহিক সম্পর্ক (পর্তুগিজ নাগরিকের সাথে) | ৩ বছর |
লিভ-ইন সম্পর্ক (পর্তুগিজ নাগরিকের সাথে) | ৩ বছর (সিভিল রেজিস্ট্রিতে রেজিস্ট্রার করা) |
দত্তক (পর্তুগিজ নাগরিক দ্বারা) | ৩ বছর |
অবৈধ অভিবাসন | ১০ বছর |
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য নাগরিকের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক | ৫ বছর |
জন্মের মাধ্যমে:
- মা পর্তুগিজ নাগরিক হলে: জন্মের সাথে সাথেই শিশু পর্তুগিজ নাগরিকত্ব পাবে।
- বাবা-মা অন্য দেশের নাগরিক:
- শর্ত: শিশুকে অবশ্যই পর্তুগালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্তর সম্পন্ন করতে হবে।
- আবেদন:
- জন্মের ২ বছর পর।
- বাচ্চার জন্ম পর্তুগালের ভূখণ্ডে হলে।
- বাবার রেসিডেন্স পারমিটের বয়স যদি ২ বছরের বেশি হয়।
বৈধ অবস্থানের মাধ্যমে:
- ৫ বছরের বেশি (৬ বছরের কম) পর্তুগালে বসবাস:
- শর্ত: পর্তুগিজ ভাষার A2 স্তরের সার্টিফিকেট প্রদান।
- অপরাধমুক্ত: আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোন মামলা বা মামলার সাজা ২ বছরের বেশি হতে পারবে না।
বিবাহের মাধ্যমে:
- একজন পর্তুগিজ নাগরিককে বিয়ে করে:
- ৩ বছর পর্তুগালে বসবাসের পর আবেদন করা যাবে।
- ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য কোন দেশের নাগরিককে বিয়ে করে:
- ৫ বছর পর্তুগালে বসবাসের পর আবেদন করা যাবে।
অন্যান্য উপায়:
- ৩ বছর ধরে একজন পর্তুগিজ নাগরিকের সাথে লিভ-ইন সম্পর্ক (সিভিল রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধিত): নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে।
- একজন পর্তুগিজ নাগরিক দ্বারা দত্তক নেওয়া হলে:
- ৩ বছর পর্তুগালে বসবাসের পর আবেদন করা যাবে।
- ১০ বছর অবৈধভাবে পর্তুগালে বসবাস: নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে।
পর্তুগালের নাগরিকত্ব লাভের সুবিধা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) সদস্যপদ: পর্তুগালের নাগরিকত্ব পেলে আপনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন সদস্য হিসেবে সমস্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
স্বাধীনভাবে বসবাস ও কর্মসংস্থানের সুযোগ: পর্তুগালের নাগরিক হয়ে আপনি ইউরোপের ২৬টি দেশে স্বাধীনভাবে বসবাস এবং কাজ করার সুযোগ পাবেন।
সেনজেন এলাকায় ভ্রমণের সুবিধা: নাগরিকত্ব পাওয়ার মাধ্যমে আপনি সেনজেন এলাকার দেশগুলোতে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করতে পারবেন।
উন্নত জীবনযাত্রার মান: পর্তুগালের নাগরিকরা উন্নত জীবনযাত্রার মান উপভোগ করেন, যা নিরাপদ পরিবেশ এবং উচ্চমানের সুযোগ-সুবিধার জন্য পরিচিত।
উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা: পর্তুগালে উন্নতমানের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়, যা নাগরিকদের জন্য একটি বড় সুবিধা।
সামাজিক নিরাপত্তা: পর্তুগালের নাগরিকত্ব আপনাকে উন্নত সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধা দেবে, যা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে সহায়তা প্রদান করে।
উল্লেখিত তথ্যগুলো সাধারণ ধারণা প্রদান করে। নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকত্ব লাভের প্রক্রিয়া ও নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য, সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস বা সরকারী ওয়েবসাইট পরিদর্শন করুন। পর্তুগালের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য, তাদের সরকারি ওয়েবসাইটগুলি দেখুন: https://justica.gov.pt/, www.irn.mj.pt.
আরও কিছু শেষ তথ্য
সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াতেও বিনিয়োগকারী হিসেবে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাত্র ৫০০০ ডলারে একটি আবাসিক পারমিট পাওয়া যায়। না জেনে বা না বুঝে লাফ দেওয়া ঠিক নয় আপনার দক্ষতা এবং যোগ্যতা বিবেচনা করে ইউরোপে অভিবাসন করার চেষ্টা করা উচিত, যদি আপনি অবৈধভাবে প্রবেশ করেন তবে আপনার অনেক ক্ষতি হতে পারে। ডেলিভারি স্লিপ দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম।
বিশ্বের সব দেশে অভিবাসন প্রক্রিয়া গোপন নয়, এটি দূতাবাসের ওয়েবসাইট এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ, যারা ইউরোপে যেতে চায়, তারা ইংরেজি পড়তে বা বুঝতে পারে না। ফলে এখানকার এজেন্সিগুলো তাদের বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে। তারা জানে না কোন যোগ্যতায় তারা যেতে পারবে সে কারণেই এখন অনেক দেশ বলছে যে, তারা নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে তাদের দেশে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে।
DISCLAIMER
এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।