স্ট্রেস কমাতে কোকো পানীয় – কোকো পানীয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা।

Written by Bikrom Das

Published on:

বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রেসের সময় এক কাপ কোকো (Cocoa) চর্বিযুক্ত খাবারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রেসের সময় আমাদের খাবারের পছন্দ হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে এক কাপ কোকো খাওয়া শরীরের উপর কিছু নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে। গবেষকরা বলছেন, স্ট্রেসের সময় আমরা যে খাবারগুলো খাই, তা আমাদের শরীরের ওপর ভালো বা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, নতুন একটি গবেষণায় এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে যে, চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে কোকো খাওয়া শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা কমিয়ে দেয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কোকোতে পাওয়া ফ্ল্যাভানল নামক রাসায়নিক যৌগের কারণে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। ফ্ল্যাভানল একটি বিশেষ ধরনের যৌগ, যা কিছু খাবার এবং পানীয়তে পাওয়া যায়, যেমন আপেল ও চা। এই যৌগগুলো স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি হতে পারে, যেমন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো। গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা স্ট্রেসের সময় চর্বিযুক্ত খাবার খেতে চান, তাদের জন্য কোকো বা সবুজ চা উপকারী হতে পারে, কারণ এগুলো শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে পারে।

স্ট্রেস কমাতে কোকো পানীয়

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন বর্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ক্যাটরিনা রেনডেইরো। তিনি বলেছেন, “আমরা জানি যে, স্ট্রেসের সময় সাধারণত মানুষ চর্বিযুক্ত খাবারের দিকে আকৃষ্ট হয়। আমরা আগে দেখেছি যে, চর্বিযুক্ত খাবার শরীরের রক্তনালীর পুনরুদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এই গবেষণায় আমরা দেখতে চেয়েছিলাম, যদি ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ খাবার চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে স্ট্রেসের সময় শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা কমিয়ে দেয় কিনা।”

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বর্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, চর্বিযুক্ত খাবার রক্তনালীর কার্যকারিতা এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ খাবার এসব নেতিবাচক প্রভাবকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। স্ট্রেসের সময় রক্তনালীর কার্যকারিতা সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এই খাবারগুলো।

কোকো এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্য

কোকোর মধ্যে উপস্থিত ফ্ল্যাভানল আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। স্ট্রেসের সময় আমরা যখন উচ্চ ক্যালোরির চর্বিযুক্ত খাবার খাই, তখন তা আমাদের শরীরের উপর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ খাবার, যেমন কোকো, এই প্রভাব কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।

স্ট্রেস ও খাদ্যপছন্দের সম্পর্ক

স্ট্রেসের সময় আমরা সাধারণত বেশি চর্বিযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ি, কারণ এসব খাবার আমাদের তাত্ক্ষণিকভাবে প্রশান্তি অনুভব করায়। তবে, দীর্ঘমেয়াদে এসব খাবারের নেতিবাচক প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি করতে পারে। তাই, স্ট্রেস কমানোর জন্য কোকো বা সবুজ চা খাওয়া অনেকটা উপকারী হতে পারে, যা শরীরের উপর সুস্থ প্রভাব ফেলতে পারে এবং স্ট্রেসের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বর্তমান জীবনে স্ট্রেস একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত যারা কর্মজীবী, তাদের উপর মানসিক চাপ অনেক বেশি। গবেষণাগুলো থেকেও এটা স্পষ্ট যে, স্ট্রেসের সময় আমরা যেসব খাবার খাই তা আমাদের শরীরের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, স্ট্রেসের সময় কিছু খাবারের মধ্যে ছোট পরিবর্তন আনা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। চলুন, এই গবেষণাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

গবেষণার উদ্দেশ্য এবং প্রক্রিয়া

গবেষণাটি ২৩ জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উপর পরিচালিত হয়েছিল। প্রথমে, তাদের প্রাতঃরাশে দেওয়া হয়েছিল ২টি বাটার ক্রোইসান্ট, ১০ গ্রাম লবণ মাখন, ১.৫ টুকরো চেডার চিজ এবং ২৫০ মিলি সম্পূর্ণ দুধ। এরপর তাদের দুইটি দলের মধ্যে ভাগ করা হয়। এক দলকে দেওয়া হয় ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ কোকো পানীয় এবং অন্য দলকে দেওয়া হয় ফ্ল্যাভানল কম কোকো পানীয়। এর পর, প্রত্যেককে একটি মানসিক গাণিতিক পরীক্ষা করতে বলা হয়, যাতে তাদের দ্রুততার সঙ্গে উত্তর দিতে হয় এবং ভুল হলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়।

এই পরীক্ষার সময়, বিজ্ঞানীরা তাদের বাহুতে রক্তপ্রবাহ, হৃদস্পন্দন এবং শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ করেন। এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গবেষকরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করার চেষ্টা করেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

গবেষণার ফলাফল

গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে, স্ট্রেসের সময় চর্বিযুক্ত খাবার এবং কম ফ্ল্যাভানলযুক্ত পানীয় খাওয়ার পর রক্তনালীর কার্যকারিতা কমে যায়। এই প্রভাব ৯০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অর্থাৎ, যদি আমরা স্ট্রেসের সময়ে চর্বিযুক্ত খাবার খাই এবং কম ফ্ল্যাভানলযুক্ত পানীয় পান করি, তবে তা আমাদের শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ কোকো পানীয় খাওয়ার ফলে এই নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব এবং রক্তনালীর কার্যকারিতা সুরক্ষিত থাকে।

ফ্ল্যাভানল সমৃদ্ধ খাবারের উপকারিতা

গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, বাজারে যে কোকো পাওয়া যায় তা সাধারণত প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তবে, যদি আমরা অল্প প্রক্রিয়াজাত কোকো খাই, তাহলে তা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। এছাড়া, যারা কোকো পানীয় খেতে পছন্দ করেন না, তারা ফ্ল্যাভানল পেতে পারেন অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে। উদাহরণস্বরূপ, সবুজ চা, কালো চা এবং বেরি জাতীয় ফলাফল ফ্ল্যাভানল সমৃদ্ধ।

ড. ক্যাটরিনা রেনডেইরো বলেন, “যারা স্ট্রেসের সময় তাড়াহুড়ো করে চর্বিযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকেন, অথবা যারা উচ্চ চাপের কাজ করেন এবং সময়ের অভাবে সুস্থ খাবার খেতে পারেন না, তারা যদি এই ছোট পরিবর্তনগুলি করেন, তবে তাদের স্বাস্থ্য উপকারিত হতে পারে।”

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

স্ট্রেসের সময়ে খাবারের সঠিক নির্বাচন

গবেষণা থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, স্ট্রেসের সময় যদি আমরা চর্বিযুক্ত খাবার খাই, তবে তা শুধু শরীরের ক্ষতি করবে না, বরং হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেবে। তবে, যদি আমরা সেই খাবারের সঙ্গে ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ কোকো বা সবুজ চা খাই, তাহলে তা শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে দেবে এবং হৃদরোগ ও রক্তচাপের স্বাস্থ্যে সহায়ক হতে পারে।

এটি আমাদের শেখায় যে, স্ট্রেসের সময় আমাদের খাদ্যাভ্যাসে ছোট পরিবর্তন আনা সম্ভব এবং তা আমাদের শরীরের জন্য বিশাল উপকারিতা নিয়ে আসতে পারে। বিশেষত, যদি আমরা খাবারের সাথে কিছু ফ্ল্যাভানল সমৃদ্ধ পানীয় বা খাবার যোগ করি, তাহলে তা আমাদের শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

গবেষণাটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। স্ট্রেসের সময় যদি আমরা খাদ্যাভ্যাসে কিছু ছোট পরিবর্তন করি, তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে। বিশেষ করে, যদি আমরা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ খাবার খাই, তবে তা আমাদের হৃদরোগ, রক্তচাপ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে। তাই, আমাদের উচিত স্ট্রেসের সময় একটু সচেতন হয়ে সঠিক খাবারের নির্বাচন করা। এই গবেষণা আমাদের শেখায় যে, স্ট্রেসের সময় চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তবে কোকো বা ফ্ল্যাভানলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া সেই প্রভাব কমাতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবারের পছন্দ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদে আমাদের হৃদরোগ ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর

স্ট্রেসের সময়ে কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?

স্ট্রেসের সময় ফ্ল্যাভানল সমৃদ্ধ খাবার, যেমন কোকো, সবুজ চা, কালো চা এবং বেরি জাতীয় ফল খাওয়া উচিত। এগুলি আমাদের শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

চর্বিযুক্ত খাবারের প্রভাব কী?

স্ট্রেসের সময় চর্বিযুক্ত খাবার খেলে রক্তনালীর কার্যকারিতা কমে যায় এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

কোকো পানীয় খাওয়ার উপকারিতা কী?

ফ্ল্যাভানল সমৃদ্ধ কোকো পানীয় খাওয়ার ফলে স্ট্রেসের সময়ে শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমে এবং রক্তনালীর কার্যকারিতা সুরক্ষিত থাকে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ফ্ল্যাভানল কি?

ফ্ল্যাভানল হলো একটি ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফলমূল, শাকসবজি, চা এবং কোকোতে পাওয়া যায়। এটি শরীরের জন্য উপকারী এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব কী?

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেস বা অন্যান্য সমস্যা থেকে বাঁচতে সহায়ক।

DISCLAIMER

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

এই আর্টিকেলে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বিশ্বস্ত মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য যে আমরা সমস্ত নির্ভুল তথ্য দিয়েছি। কোনো প্রতিক্রিয়া বা অভিযোগের জন্য [email protected] মেইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপJoin Us
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলJoin Us
আমাদের ফেসবুক পেজFollow Us
আমাদের কোরা পেজFollow Us
গু নিউজে ফলো করুনFollow Us

Bikrom Das

আমি বহু-বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছি। আমি বাজার দর, রোজগার, অটোমোবাইল, টেলিকম, টেকনোলজি, জীবনধারা, ধর্ম এবং জাতি নিয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে লেখালেখি করে থাকি। আমার লেখাগুলো তথ্যবহুল, পাঠকের কাছে সহজবোধ্য এবং সমসাময়িক। Mymensingh, Bangladesh. Whatsupbd.com-এ আমার আর্টিকেলগুলো পাঠকদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি জীবনের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় দিকগুলোতে আলোকপাত করে। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি এবং বাজার বিশ্লেষণে আমার লেখা পঠনযোগ্যতা বাড়ায়। আমার (Bikrom Das) লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি পাঠকগোষ্ঠী তৈরি করা, যারা আমার তথ্যসমৃদ্ধ ও নির্ভুল কনটেন্ট থেকে উপকৃত হবে।